ছাত্রদের টাকা জমানোর উপায় ও অর্থ সঞ্চয়ের ৭ টি কৌশল

ছাত্রদের টাকা জমানোর উপায় এবং অর্থ সঞ্চয় এর কৌশল নিয়ে, আজ আমরা বিস্তারিত, আলোচনা করতে যাচ্ছি।

ছাত্রজীবনে, আনন্দ এবং উত্তেজনা নিয়ে ভরপুর থাকলে, টাকার কষ্ট তবে সে জীবন এর ১ টি অংশ হয়ে দাড়ায়।

কারন পড়াশোনা চলাকালীন সময়ে অনেক শিক্ষার্থী টিউশনি করলেও সেখানে যা টাকা ইনকাম হয়।


সে টাকা দিয়ে পকেট খরচ চালিয়ে নিলেও অন্তত কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাড়িতে টাকা পাঠানো সম্ভব হয়না।

কিন্তু যারা পার্ট টাইম জব করে, তারা কিছুটা হলেও সুবিধা পেয়ে থাকে উপার্জিত টাকা খরচের পরেও সঞ্চয় করার।

বিশেষ করে, আপনাদের মধ্যে কেউ যদি উচ্চ শিক্ষা নিতে চান? এছাড়া,যারা মেসে থেকে লেখাপড়া করেন।
কিন্তু টাকা সঞ্চয় এর কৌশল না জানলে তবে ভবিষ্যৎ এ পঠনপাঠন চালানোর ক্ষেত্রে, অনেক মুশকিল  হতে পারে।

এ জন্য, আমাদের এই পেজে কিছু কৌশল শিখিয়ে দেবো। যা অনুসরণ করলে, ছাত্রজীবনে অনেক টাকা জমাতে বা সঞ্চয় করতে পারবেন।

তো বন্ধুরা, আপনি যদি ছাত্রজীবনে টাকা সঞ্চয় করার বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত ধারনা পেতে চান। তাহলে,  নিচের দেওয়া পদক্ষেপ গুলো ধাপে ধাপে অনুসরণ করুন।

০১। বাজেট পরিকল্পনা করুন

টাকা সঞ্চয় করার প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে, বাজেট পরিকল্পনা বা প্ল্যানিং করা।

তার জন্য আপনার সকল সম্ভাব্য ইনকামের উৎস কে নোট ডাউন করতে হবে।

যেমনঃ পার্ট টাইম জব,টিউশনিকে উপেক্ষা করে কাছের মানুষ বা আত্মীয়স্বজন দের কাছ থেকে টাকা পাওয়ার মতো বিষয়সমুহ এ চার্টে লিপিবদ্ধ করে রাখুন।

এরপর সর্বমোট টাকা থেকে প্রত্যেক মাসের দরকারি খরচগুলো, যেমন- হোস্টেল বিল,মোবাইলে টাকা রিচার্জ, ওয়াইফাই বিল, টিফিন খরচ ও যাতায়াত খরচ ইত্যাদি আলাদা করে রাখুন।

এরপর, অবশিষ্ট টাকার পরিমান এর থেকে ৫০০ বা ১০০০ টাকার মতো আলাদা করে রাখুন ইমার্জেন্সি কোন প্রয়োজনের জন্য।

তারপর যে টাকা টা আপনার কাছে থাকবে সেটাই হচ্ছে আপনার সঞ্চয়। 

এইভাবে যদি আপনি প্রত্যেক মাসের বা বছরের জন্য বাজেট পরিকল্পনা করতে পারেন তাহলে অদরকারি জিনিস পত্র কিনে টাকা ব্যয় করার থেকে আপনি নিজেকে বাচাতে পারবেন, যার ফলে আগামী দিনের জন্য টাকা সঞ্চয় করতে পারবেন।

০২। খরচের সোর্স গুলো অনুসন্ধান করুন

প্রতেক মাস শেষ হওয়ার আগে যদি আপনি মনে করেন যে, আপনার একাউন্ট হতে পরিকল্পিত বাজেট এর অনেক টাকায় বের হয়ে যাচ্ছে তাহলে, সময় হয়েছে খরচের কারন গুলি খুজে বের করার।

এজন্য, প্রথমে আপনাকে যেটা করতে হবে তা হলো, ৩-৪ মাস আপনি যতো গুলো পন্য কিনবেন বা যে সমস্ত কাজের জন্য টাকা খরচ করবেন।

 সেগুলোর প্রতেক টি লিখে রাখুন। সে ক্ষেত্রে একটা কলম কেনা হক অথবা হোটেলে খাওয়া বা ছোট বড় সবকিছুর খরচ খাতায় লিখে রাখুন।

এসব করে আপনি নিজে নিজেই বুঝতে পারবেন যে, ঠিক কি কি কারনে অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে।

০৩। (৪০ - ২০ - ১০) রুল ফলো করুন

অনেক সময় আমরা দরকারি জিনিসের চেয়ে অদরকারি জিনিসের পিছনে, টাকা খরচ করে মাসের জন্য রেখে দেওয়া  নির্ধারিত টাকার হিসাবে গড়মিল করে বসি।

এজন্য বাজেট আলাদা করার একটি গুরুত্বপুর্ণ সহজ উপায়, ৪০- ২০- ১০ রুল টা অনুসরণ করতে পারেন।

কথাটা একটু সহজ করে বলি,

আপনার ইনকামের ৪০% দরকারি জিনিসের জন্য ব্যয় করুন, ২০% বিভিন্ন চাহিদার জন্য রাখুন আর বাকি ১০% টাকা সঞ্চয় করুন।

এই রুল ফলো করতে গেলে, আগে আপনাকে খুজে বের করতে হবে কোন বিষয়গুলো আপনার দরকারি এবং কোন বিষয়কে আপনি চাহিদার খাতায় ফেলছেন।

তহলেই, আপনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।

উদাহরণ ঃ কলেজ অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাড়ি থেকে টিফিন নিবেন, নাকি বাইরে থেকে খাবার কিনে খাবেন?

কলেজ ক্যাম্পাসে নিজের গাড়ি নিয়ে যাবেন নাকি অটো, বাস, সি এন জি ইত্যাদি করে যাবেন?

০৪। পরিকল্পনা অনুযায়ী বাজেট মেনে চলুন

বাজেট মতো প্রতিদিন চলা খুব কঠিন বিষয় হলেও এরকমটাই বেশি দরকার।

কারন আপনি যদি প্রয়োজনের তুলনায় বেশি টাকা খরচ করে ফেলেন তবে, এর জন্য আপনাকে পরবর্তী মাসে সংকটে পরতে হবে।

এজন্য কষ্ট করে হলেও একটানা কয়টা মাস বাজেট অনুযায়ী চলা শিখুন।

একবার যদি পরিকল্পনা মতো বাজেট মতো চলার অভ্যাস হয়ে যায় তাহলে, কোন মাসেই আপনাকে সংকটে পরতে হবে না এবং কোন সমস্যায় পরতে হবে না।

০৫। সুবিধা অনুযায়ী কলেজের মাইনে পরিশোধ

আপনি যদি কখনো শিক্ষার্থী লোন নিতে চান তাহলে, 

আপনি এমন একটি লোনের দিকে এগিয়ে যান, যে লোন নিলে আপনাকে প্রতি মাসে উচ্চসুদ দিতে না হয়।

কারন মাসের সকল খরচ মিটিয়ে লোন পরিশোধ করা অনেক কঠিন হয়ে পরে।

এজন্য নিজের সুবিধা অনুযায়ী শিক্ষার্থী লোন এর জন্য অ্যাপ্লাইড করুন।

এর মাধ্যমে টাকা সঞ্চয় করা অনেক সুবিধা হবে।

০৬। বাড়ি থেকে টিফিন সংগ্রহ করুন

অনেক সময় খাবার এর পেছনে আমরা অনেক টাকা খরচ করর ফেলি।

এজন্য আপনি যে বিশ্ববিদ্যালয় এ পড়েন, সেখানকার ক্যানটিন এর খাবার বেশি দাম দিয়ে না কিনে আপনার বাড়িতেই টিফিন জাতীয় খাবার তৈরি করতে পারেন।

আপনি যদি এরকমটা করতে পারেন তাহলে, টাকা সঞ্চয় করতে পারবেন।

একই সঙ্গে বাইরের খাবার থেকে সাস্থ্যঝুকি ও হবে না, বাড়ির খাবার খেলে।

তবে এক্ষেত্রে আপনি যদি রান্না করতে না জানেন তাহলে, ইউটিউব সার্চ করে কিছু সহজ টিফিন রেসিপি খুজে দেখতে পারেন।

০৭। পাঠ্য বই এবং খাতায় টাকা সঞ্চয় করুন

পাঠ্যবই এবং খাতা কেনার সময় স্টুডেন্টরা অনেক টাকা ব্যয় করে থাকে।

এইজন্য আপনার থেকে সিনিয়র যারা আছেন, তাদের কাছ থেকে পুরোনো বই সংগ্রহ করতেপারেন।

এর পাশাপাশি নতুন খাতা না কিনে, আগের খাতার ভালো পেজ গুলা ব্যবহার করতে পারেন।

আপনার বন্ধুদের কাছ থেকেও অব্যবহৃত খাতার ভালো পেজ সমুহ চাইতে পারেন।

আপনার এ অভ্যাস টাকা সঞ্চয় করতে যেমন সাহায্য করবে, ঠিক একই ভাবে পরিবেশের জন্য ও গুরুত্বপুর্ণ একটি পদক্ষেপ হয়ে ওঠবে।

এছাড়াও ইন্টারনেট সার্চ করে বিভিন্ন অ্যাপ থেকে ই বুক ডাউনলোড দিয়ে পড়াশোনা করতে পারেন।

শেষ কথাঃ তাহলে বন্ধরা, শিক্ষার্থী দের টাকা সঞ্চয় করার উপায় এবং কৌশল গুলো আপনাদের কেমন লাগলো?

সেটা কমেন্ট করে অবশ্যই জানাবেন। ধন্যবাদ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন